ফাউল কলেরা
ফাউল কলেরা একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাকটেরিয়াল রোগ যা বাণিজ্যিক পোল্ট্রি শিল্পে বড় ধরনের হুমকি হিসেবে দেখা দেয়। Pasteurella multocida ব্যাকটেরিয়ার কারণে এই রোগটি ঘটে এবং এটি মুরগি, টার্কি, এবং জলপাখির মতো নানান পাখি প্রজাতির উপর প্রভাব ফেলে। উচ্চ মৃত্যুহার ও উৎপাদন হ্রাসের কারণে এটি অর্থনৈতিক ক্ষতির সৃষ্টি করে। পোল্ট্রি ব্যবসার জন্য এই রোগটি একটি প্রধান উদ্বেগ হিসাবে দেখা দেয়, যা এর প্রভাব কমানোর জন্য কার্যকর ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। সুস্থ ও উৎপাদনমুখী পোল্ট্রি খামার নিশ্চিত করতে মুরগির কলেরার বিষয়ে ভালো ধারণা রাখা জরুরি।
রোগ পরিচিতি
পাস্তুরেলা মাল্টোসিডা (Pasteurella multocida) হলো Gram negative , nonmotile এবং Sensitive to penicillin ব্যাকটেরিয়া। এটার ১৬ টি সেরোটাইপ আছে এবং ইহা ২ প্রকার রোগ সৃষ্টি করে।
Acute Form: এ প্রকার রোগে ব্যাকটেরিয়াটি রক্তে মিশে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং তীব্র আকার ধারণ করে। মুরগিগুলো হঠাৎ মারা যেতে পারে মারা যেতে পারে কোন পূর্বাভাস ছাড়াই কোন। এক্ষেত্রে কিছু সাধারণ লক্ষণ দেখা দিতে পারে যেমন জ্বর, ঝিমানো,নাক মুখ দিয়ে ঝিল্লি পড়া, সবুজ পাতলা পায়খানা ইত্যাদি।
Chronic Form: এক্ষেত্রে ব্যাকটেরিয়াটি সারা শরীরে ছড়িয়ে না পড়ে, কোন বিশেষ অঙ্গকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এক্ষেত্রে Acute form এর লক্ষণ গুলোর পাশাপাশি বিশেষ লক্ষণ যেমন- মুখমণ্ডল ফোলা, কানের লতি, পায়ের পাতা ও বিভিন্ন জয়েন্ট ফোলো দেখা দিবে।
রোগ সংক্রমণ:
আক্রান্ত মুরগিকে যদি সুস্থ মুরগিকে ঠোকর মারে তাহলে জীবাণু অসুস্থ মুরগি থেকে সরাসরি সুস্থ মুরগিতে প্রবেশ করে।
ব্যাকটেরিয়াটি দূষিত আবহাওয়ার মাধ্যমে যেমন- মাটি, পানি ও বায়ু হতে সরাসরি খামারে প্রবেশ করতে পারে।
অসুস্থ মুরগি ও সুস্থ মুরগি যখন একই সাথে, একই পাত্রে খাদ্য ও পানি গ্রহণ কর, সেই পাত্র থেকে সুস্থ মুরগির দেহে জীবাণুটি প্রবেশ করতে পারে।
খামারে আগত দর্শনার্থী, কর্মরত কর্মী পোশাক থেকে এবং খাদ্য বহনকারী গাড়ি হতেও এ জীবাণু খামারে প্রবেশ করতে পারে।
বন্যপ্রাণী বিশেষ করে ইদুর থেকে এ জীবাণু খামারে প্রবেশ করতে পারে।
প্রতিরোধ
নির্দিষ্ট সময়ে টিকাদানের ব্যবস্থা করতে হবে। টিকা প্রদান করলে এ রোগে হবার সম্ভাবনা অনেকাংশে কমে আসে।
খামারে বায়ো সিকিউরিটি যেমন- আক্রান্ত মুরগি বা নতুন মুরগিকে খামারে ছাড়ার আগে ICU তে রাখা, খামারে আগত দর্শনার্থী ও কর্মরত কর্মচারী কে জীবাণু মক্ত করে খামারে প্রবেশ নিশ্চিত করা, মুরগি বিক্রি করা পর ভালো ভাবে খামারটিকে বিশেষ করে পানি ও খাদ্যের পাত্র কে জীবণুমুক্ত করা।
খামারে চারপাশে কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে যাতে পোকামাকড় বিশেষ করে ইদুর প্রবেশ না করতে পারে। তবে খেয়াল রাখতে হবে যাতে এই কীটনাশক খামারে ভিতর না আসে।
আপনার মুরগিকে সুষম খাদ্য ও পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা।
Contacts
Subscribe to our newsletter
+8801819486145