মাইকোপ্লাজমা

মাইকোপ্লাজমা একটি ছোট ব্যাকটেরিয়া যা খালি চোখে দেখা যায় না কিন্তু ধীরে ধীরে আপনার খামারটিকে শেষ করার জন্য যথেষ্ট। প্রকৃতিতে অনেক ধরনের মাইকোপ্লাজমা রয়েছে যা প্রাণী,মানব দেহ এমনকি উদ্ভিদ ও পোকামাকড় কেও ক্ষতি সাধন করে। খুবই ধীরগতিতে এরা বংশবিস্তার করে বলে এদের ক্ষতির মাত্রা প্রাথমিকভাবে চোখে পড়ে না। আপনার মুরগি কি হঠাৎ ল্যাংড়া হয়ে খাদ্য বা পানির পাত্রে আশেপাশে বসে আছে? যদি থাকে তাহলে আজই ব্যবস্থা নিন। তাই ব্যবস্থা নেওয়ার আগে চলুন জেনে নেই এই ব্যাকটেরিয়া সম্পর্কে।

ব্যাকটেরিয়ার পরিচিতি

মাইকোপ্লাজমা ব্যাকটেরিয়া ২০ প্রজাতির মধ্যে দুই ধরনের প্রজাতি মুরগিকে আক্রান্ত করে।

  • মাইকোপ্লাজমা গ্যালিসেপটিকাম (Mycoplasma Gallisepticum)

  • মাইকোপ্লাজমা সাইনোভিয়া (Mycoplasma Synoviae)

মাইকোপ্লাজমা গ্যালিসেপটিকাম (Mycoplasma Gallisepticum) প্রজাতি দ্বারা সৃষ্ট রোগের নাম হচ্ছে Chronic respiratory disease (CRD) বা Infectious Sinusitis বলা হয়ে থাকে।

মাইকোপ্লাজমা সাইনোভিয়া (Mycoplasma Synoviae) প্রজাতি দ্বারা সৃষ্ট রোগের নাম হচ্ছে আর্থ্রাইটিস (Arthritis)

Mycoplasma Gallisepticum
Mycoplasma Gallisepticum

সংক্রমণ পদ্ধতি

Vertical way of transmission

এ পদ্ধতিতে আক্রান্ত প্রাপ্তবয়স্ক মুরগি যখন ডিম পারে, তখন এই ব্যাকটেরিয়া ডিমের ভেতর চলে আসে এবং সে ডিম থেকে যে বাচ্চা হয়, সে বাচ্চাও এই ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হয়।

Vertical way of transmission for mycoplasmosis
Vertical way of transmission for mycoplasmosis
Horizontal way of transmission
  • আক্রান্ত মুরগিকে যদি সুস্থ মুরগিকে ঠোকর মারে তাহলে জীবাণু অসুস্থ মুরগি থেকে সরাসরি সুস্থ মুরগিতে প্রবেশ করে।

  • ব্যাকটেরিয়াটি দূষিত আবহাওয়ার মাধ্যমে যেমন- মাটি, পানি ও বায়ু হতে সরাসরি খামারে প্রবেশ করতে পারে।

  • অসুস্থ মুরগি ও সুস্থ মুরগি যখন একই সাথে, একই পাত্রে খাদ্য ও পানি গ্রহণ কর, সেই পাত্র থেকে সুস্থ মুরগির দেহে জীবাণুটি প্রবেশ করতে পারে।

  • খামারে আগত দর্শনার্থী, কর্মরত কর্মী পোশাক থেকে এবং খাদ্য বহনকারী গাড়ি হতেও এ জীবাণু খামারে প্রবেশ করতে পারে।

  • বন্যপ্রাণী বিশেষ করে ইদুর থেকে এ জীবাণু খামারে প্রবেশ করতে পারে।

Horizontal way of transmission for mycoplasmosis
Horizontal way of transmission for mycoplasmosis

ব্যাকটেরিয়াটি দেহে যেভাবে বিস্তার ঘটায়

Mycoplasma Gallisepticum এই ব্যাকটেরিয়াটি মুরগির দেহের বিভিন্ন গ্রহণকারী অঙ্গ যেমন চোখের - Conjunctiva, নাকের-Nasal passage, শ্বাসনালীর, শ্বাসনালীর আস্তরণ ও সাইনাস ইত্যাদি দ্বারা দেহের ভেতর প্রবেশ করে থাকে এবং বংশবিস্তার করতে থাকে। এ সময় কিছু ছোটখাটো লক্ষণ দেখা দেয় তখন যদি ট্রিটমেন্ট না নেওয়া হয় তখন এই ব্যাকটেরিয়া গুলো দেহের নিম্মগামী অঙ্গ ছড়িয়ে পড়ে, যেমন- ব্রঙ্কাই, ফুসফুস ইত্যাদি। এরপর রক্তের সাথে মিশে দেহে থাকা ই-কলাই সাথে মিলে আপনার মুরগির বারোটা বাজাই এবং CCRD ( Complex Chronic Respiratory Disease) দেখা দেয়।

Mycoplasma Synoviae ক্ষেত্রে একইভাবে মুরগির দেহে প্রবেশ করে রক্তে মিশে দেহের বিভিন্ন জয়েন্টকে আক্রান্ত করে ল্যাংড়া করে দেয়।

Mycoplasma Gallisepticum where and how affect
Mycoplasma Gallisepticum where and how affect

লক্ষণ

যদি চোখের conjunctiva কে আক্রান্ত করে তাহলে চোখ লাল হবে এবং চোখে পানি আসবে, যদি নাকের দিয়ে প্রবেশ করে তাহলে সর্দি হবে এবং এর থেকে একটু নিচে চলে গেলে মুরগির কফ হবে এবং হা করে নিঃশ্বাস নিতে থাকবে আর যদি সাইনাসকে আক্রান্ত করে তাহলে সমস্ত মাথা ফুলে যাবে। Mycoplasma Synoviae ক্ষেত্রে ল্যাংড়া হয়ে যাবে।

পোস্টমর্টেম লক্ষণ

মুরগি গুলি কে পোস্টমাটাম করলে প্রথমে দেখা যাবে বুকে ফোস্কা পড়ে আছে, এছাড়া কিডনি ফেকাসে ও বড় হয়ে গেছে। লিভার এর উপর সাদা ঝিল্লি দেখা দিবে (এখানে উল্লেখ্য যে যদি CCRD হয় তাহলে লিভার এ হলুদ ঝিল্লি দেখা দিবে।

প্রতিকার

For early mortality
Doxacil-vet - 1gm/4 liter water 3 to 4 days
For CRD (Chronic respiratory disease)
Doxacil-vet 1 gm/ 2 liter +Tam-vet 2.5 gm/ 1 liter for 5 days
For CCRD ( Complex Chronic Respiratory Disease )
Doxacil-vet 1 gm/2 liter + Tam-vet 2.5 gm/ 1 liter + Enflox-vet 1 ml/ 2 liter for 5 days